Anchore Cattle Feeds
Aleya Feeds
Add-Old

Anchore Fish

Poultry News#অপপ্রচারে পোলট্রি শিল্প সংকটের মুখে

অপপ্রচারে সংকটের মুখে পড়েছে পোলট্রি শিল্প। প্লাস্টিকের ডিম তৈরিসহ রয়েছে নানা ধরনের অপপ্রচার। কোথাও বলা হচ্ছে মুরগির মাংসে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া। আর পোলট্রির খাবার পুরোটাই তৈরি হচ্ছে ট্যানারির বর্জ্য থেকে। এসব অপপ্রচারের জন্য বেছে নেয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এ শিল্পের ওপর। কিন্তু এগুলো প্রতিরোধে নেয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক খাত পোলট্রি শিল্প। এটি কৃষি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপ-খাত। মেধাবী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠন ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর বিকাশে সরকারের যা করণীয় সব করবে।

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ফেসবুকে নকল ডিম নিয়ে যে প্রচারণা তা ভিত্তিহীন। এ পর্যন্ত নকল ডিমের সন্ধান পাওয়া যায়নি। সন্ধান দিতে পারলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার কালেরপাড়া গ্রামের খামারি আশেক মাহমুদ গত আগস্টে ২০-৩০ টাকা দরে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা কেনেন। এরপর এক মাস পালন করতে ১১০ টাকা ব্যয় হয়। পাইকারি বাজারে মুরগির দাম পেয়েছেন ৮৫-৯০ টাকা। এই লোকসানের কারণ ওই সময়ে গণমাধ্যমে ভেজাল ফিড নিয়ে খবর প্রচারিত হয়। এদিকে পোলট্রি শিল্প নিয়ে অপপ্রচারগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সম্প্রতি র‌্যাব ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর যৌথ অভিযানে হাজারীবাগ ট্যানারি শিল্প এলাকায় খোলা স্থানে ট্যানারির বর্জ্য জব্দ করে। সে সংবাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে বলা হয় ট্যানারির বর্জ্যমিশ্রিত ফিড জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের গবেষণার তথ্য বিকৃতি করেও সোশ্যাল মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশ লাইভস্টক রিসার্চ ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক. ড. নাথুরাম সরকার বলেন, তথ্য বিভ্রাটের কারণে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এতে সাধারণ মানুষ ডিম ও মুরগির মাংস খাওয়া কমিয়ে দিতে পারে। বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে দেখার প্রয়োজন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পোলট্রি ফিডের বার্ষিক উৎপাদন ৬০ লাখ টন। ফিড মিলে উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ৯০ ভাগ। অবশিষ্ট ১০ ভাগের মধ্যে বেশিরভাগই হাতে তৈরি হচ্ছে। অপরদিকে ট্যানারি শিল্পের উৎপাদিত বর্জ্যরে মোট পরিমাণ পোলট্রি শিল্পের মোট খাদ্য চাহিদার মাত্র দেড় শতাংশ। বর্জ্যরে বড় অংশ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে ধ্বংস ও বাকিটা নদীতে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্টদের মতে, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বর্জ্যরে কিছু অংশ পোলট্রি ও মাছের খাবারে মেশাচ্ছে। তবে এর পরিমাণ অতি নগণ্য। তবে সরকারের সঠিক নজরদারি থাকলে এটিও খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় বলে মনে করেন তারা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রিয় মোহন দাস বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ ফিড উন্নত ফর্মুলায় এবং আধুনিক ফিড মিলগুলোতে তৈরি হচ্ছে। তাই পোলট্রি বা ফিশফিড নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নকল ডিম নিয়ে বেশ জোরেশোরে অপপ্রচার চলছে। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় এটি সত্য নয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর প্লাস্টিকের তৈরি ডিমের সন্ধান এখন পর্যন্ত পায়নি।

সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, ডিম সম্পর্কে মানুষের মাঝে অনেক ভুল ধারণা আছে। পোলট্রির মাংস এবং সামগ্রিকভাবে এ শিল্প সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক প্রচারণা রয়েছে, যার অধিকাংশই হয়তো সত্য নয়। তাই এ সম্পর্কে নিশ্চুপ না থেকে বাস্তবতা তুলে ধরতে হবে। গণমাধ্যম ও পোলট্রি শিল্পের মাঝে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।

এদিকে পোলট্রি মাংস নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, অবৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংবাদ পরিবেশ করে যাচ্ছে একটি মহল। বলা হয় ব্রয়লার মুরগিতে প্রচুর কোলস্টেরল থাকে এবং মাংস খেলে ক্যান্সার হবে। ব্রয়লার মুরগি খেলে ক্যান্সার বা অন্য কোনো রোগ হওয়ার আশঙ্কা বিন্দুমাত্র নেই- বলছে আন্তর্জাতিক জার্নাল থেকে শুরু করে দেশের পোলট্রি ও পুষ্টি বিজ্ঞানীরা। ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখার সাবেক সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, নিরাপদ পোলট্রি উৎপাদনে এখন অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ২০২৪ সালের মধ্যে শতভাগ অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদন সম্ভব। বিএবির সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান বলেন, কিছু নেতিবাচক প্রচারণার কারণে ব্রয়লার মুরগির মাংস সম্পর্কে ভোক্তাদের মাঝে বিভ্রান্তি বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েক বছর আগের তথ্যগুলোও রহস্যজনকভাবে ঘুরেফিরে আসছে। বিপিআইসিসির হিসাব মতে, ২০২১ সালের চাহিদা মেটাতে বছরে প্রায় ১ হাজার ৮১৯ কোটি ডিম, ৩৩-৩৫ লাখ টন মুরগির মাংস উৎপাদন করতে হবে। এ চাহিদা পূরণে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন। কিন্তু এ ধরনের অপপ্রচার, অস্থিতিশীল বাজারের কারণে অনেকেই বিনিয়োগের আগ্রহী হয় না। বর্তমান এ খাতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। কর্মরত আছে ৬০ লাখ মানুষ। ২০২৫-৩০ সালের চাহিদা পূরণ করতে হলে বিনিয়োগ প্রায় দ্বিগুণ করতে হবে।

Bags
PP Bag
fish
Poultry
Cattle
Cattle2
Poultry2
Chicks
Layer
Chicks2
>
<